নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ অর্থনৈতিক অনিয়ম, চাকুরি বিধিমালা ভঙ্গ, জ্ঞাত আয় বহির্ভূভ সম্পদ অর্জন, স্বজনদের নামে স্টল বরাদ্দসহ নানান অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) এর চার কর্মকর্তাকে চাকুরিত্যুত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস।
চাকুরিত্যুতরা হলো- বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মশিউর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, ট্রেড সুপারেন্টেন্ডেন্ট আজিজ শাহিন ও বাজার সুপারেন্টেন্ডেন্ট নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, সকল প্রকৃয়া সম্পন্ন শেষে নিয়মানুযায়ী তাদেরকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ২৯ মে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন এ সংক্রান্তে আদেশ/নোটিশ জারি করেন। আর কর্তৃপক্ষ মনে করে এই চার জনের কর্মকা-ে সিটি কর্পোরেশনের ভাবমূর্তি অনেকাংশে ক্ষুণ্নসহ আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়েছে। তাই তাদের চার জনকেই চাকুরিত্যুত করা হয়েছে।
বিসিসির প্রশাসনিক দফতর সূত্র থেকে জানা গেছে, অভিযুক্ত সবার বিরুদ্ধেই রয়েছে পাহাড়সম দুর্নীতির অভিযোগ। তারা সিটি করপোরেশন থেকে র্দুর্নীতির মাধ্যমে বহু টাকা আয় করেছেন। নগরীতে তাদের রয়েছে অনেক সম্পদ। যার প্রমাণ পেয়ে তাদের চাকুরিচ্যুত করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে মশিউর রহমান সব আমলেই পার্সেন্টেজ নিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। ঠিকাদারদের বিল ছাড়াতে মশিউর রহমানকে শতকরা দুই ভাগ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। তাকে টাকা না দিয়ে কেউ বিল ছাড়াতে পারেন না। সিটি করপোরেশনের কর্মচারীদের বেতন বকেয়ার পেছনেও বেশি দায়ী ছিলেন মশিউর রহমান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করায় বেশি খুশি হয়েছেন কর্মচারীরা। একাধিক কর্মচারী বলেন, ‘মশিউর রহমান সব আমলে মেয়র ও ঠিকাদারদের খুশি রাখার চেষ্টা করতেন। কর্মচারীদের বেতন আটকে কীভাবে অন্যদের সুবিধা করে দেওয়া যায় সেই হিসাব কষতেন তিনি। বিগত সময়ে যারা মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন তারাও অনেকটা নির্ভরশীল ছিলেন মশিউরের উপর। কারণ মশিউরের কাছেই সব অর্থের হিসাব। মশিউর রহমানের কারণেই আমরা (কর্মচারী) ঠিকমতো বেতন পাইনি।’
চাকুরিচ্যুত কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন হাট-বাজার শাখার সুপারিনটেনডেন্ট নুরুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গত পাঁচ বছরে বাজার শাখা থেকে অনিয়মের মাধ্যমে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নুরুল ইসলাম বাজার শাখাকে দুর্নীতির একটি আখড়া তৈরি করেন। নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় কর্মচারীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, ট্রেড সুপারেন্টেন্ডেন্ট আজিজ শাহিনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে তাদেরকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
উল্লেখ্য অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মশিউর রহমান, ট্রেড সুপারেন্টেন্ডেন্ট আজিজ শাহিন ও বাজার সুপারেন্টেন্ডেন্ট নুরুল ইসলাম চাকুরিচ্যুত হওয়ার আগ পর্যন্ত বরখাস্ত অবস্থায় ছিলেন।
Leave a Reply